Skip to content
inbound4190519342914136108 scaled

For Adult only

উপন্যাসিকা

এক

চা দোকানের দিনগুলি

সুদীপ ঘোষাল

প্রবীর পন্ডিতজির চায়ের দোকানে এসে বললো, আমরা চা খাব না, চা খাব না আমরা। পন্ডিতজি বললো, হবে চা হবে। গল্প হবে। বিখ্যাত উক্তি দিয়ে কথা শুরু করলে প্রবীরবাবু। ভালো লাগলো তোমার হিউমার অফ সেন্স আছে বাপ।
আমরা পন্ডিতজির চায়ের দোকানে দশ বারোজন আড্ডা মারি প্রতিরাতে। তাই চায়ের দোকানে প্রাণখুলে আড্ডা চলবে রাত এগারোটা অবধি। তারপর চলবে চা, চা আর চা। আমি বললাম অভিশাপ কথাটা শুনলেই অনেকেই চমকে ওঠেন। রতনদের পাড়ার এক বুড়োকে সবাই রাগিয়ে মজা পেত খুব। আর সেই বুড়ো রেগে গিয়ে বলত, তোর তেরাত পেরোবে না। এত বাড় ভালো না।কি আশ্চর্য তিনরাতের মাথায় সেই ছেলেটি মারা গেছিলো।
আমার কথা শুনে পন্ডিত বললো, ওই বুড়োকে কেউ রাগিয়ে দিবি না। অভিশাপ দিলেই মরবি। নীরেন তর্ক করে বুড়োকে রাগিয়েছিলো।সে বলেছিলো, এই বুড়ো তোর টাকে গু। তোর ছেলে রবি ডুবুডুবু। যা বাড়ি যা রবি মরে ভূত।বুড়ো আবার রেগে বলল,তোর তেরাত্রি পেরোবে না। মরবি, মরবি,মরবি।নীরেন ঠিক তিনরাতের মধ্যে মরে গেল।
এগুলো কুসংস্কার, মানুষের মনে গেঁথে আছে।এ কুসংস্কার তো সহজে যাবার নয়।
পাড়ার সকলের খুব দুঃখ হলো। পন্ডিত বললো, বুড়োকে রাগিয়ে দিবি না। ইতিহাসে অভিশাপের ভুরি ভুরি প্রমাণ আছে। আমরা আগ্রহী হয়ে উঠলাম শোনার জন্য। পন্ডিত শুরু করলো ইতিহাসের কাহিনী। সে বললো, আমাদের জীবনে মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যায় যার ব্যাখ্যা পাওয়া বেশ দুষ্কর। কেউ কেউ সেগুলোকে কাকতালীয় ঘটনা বলে ভাবতে চান, কেউ আবার একধাপ এগিয়ে গিয়ে সেগুলোকে কারো ‘অভিশাপ’ হিসেবে ভাবতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ইতিহাসেও এমন কিছু কাকতালীয় ঘটনা আছে যা অনেকের কাছেই অভিশাপ হিসেবে পরিচিত। তারপর পন্ডিত সকলকে চা দিল। এবার দোকান গুটিয়ে দেবে আজকের মত। আমরা সকলে বললাম, পন্ডিতজী,আজ আমাদের গল্প শোনাও। রাত হলেও তোমার লোকসান হবে না। আমরা মাঝে মাঝে চা খাব। তুমি প্রথমে এক কেটলি ভালো করে চা বানিয়ে নাও। পন্ডিতজি আমাদের খারাপ চা দেয় না। আমরা পাড়ার ছেলে। তাই আদর করে স্পেশাল চা দেয়। চা খাবার পর পন্ডিতজি শুরু করলো গল্প বলা। তুর্কী-মোঙ্গল সেনাধ্যক্ষ তৈমুর লং ছিলেন তিমুরীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। ১৩৭০ থেকে ১৪০৫ সাল পর্যন্ত ৩৫ বছর পর্যন্ত ছিলো তার রাজত্ব। আজকের দিনের তুরষ্ক, সিরিয়া, ইরাক, কুয়েত, ইরান থেকে মধ্য এশিয়ার অধিকাংশ অংশ, কাজাখস্তান, আফগানিস্তান, রাশিয়া, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান, পাকিস্তান, ভারত, এমনকি চীনের কাশগর পর্যন্ত তার সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিলো। ১৪০৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মারা যান এখন কয়েক শতাব্দী সামনে আসা যাক। ১৯৪১ সালের কথা। স্থানীয় মুসলমান বাসিন্দা ও ইমামের সতর্কতা উপেক্ষা করে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতা জোসেফ স্টালিন একদল ভূতত্ত্ববিদকে উজবেকিস্তানের সমরকন্দে পাঠিয়েছিলেন তৈমুরের কবরটি খনন করে দেহাবশেষ বের করে আনার জন্য। অবশেষে ১৯৪১ সালের ১৯ জুন দলনেতা মিখাইল গেরাসিমভের নেতৃত্বে তৈমুর লং-এর কবরটি পুনরায় খনন করা হয়। কবর খোড়ার পর তারা একটি কফিন পান যাতে লেখা ছিলো- “যে আমার কবর খুলবে, সে আমার চেয়েও ভয়াবহ এক আক্রমণকারীকে লেলিয়ে দিবে।”

কাকতালীয়ভাবে এর মাত্র দু’দিনের মাথায় হিটলার আক্রমণ করে বসেন সোভিয়েত ইউনিয়নে এবং এর ধাক্কায় প্রায় ২৬ মিলিয়ন লোক প্রাণ হারায়। ঐতিহাসিকদের মতে, তৈমুরের যুদ্ধাভিযানে ১৭ মিলিয়নের মতো মানুষ মারা গিয়েছিলো। ১৯৪২ সালে স্টালিন তৈমুরের দেহাবশেষ ইসলামিক রীতি অনুযায়ী পুনরায় কবর দেয়ার নির্দেশ দেন। আবারো কাকতালীয়ভাবে এর কিছুদিন পরেই স্টালিনগ্রাদে জার্মান বাহিনী আত্মসমপর্ণ করে। পন্ডিতজি পড়াশুনো করেন খুব। চায়ের দোকানে অবসরে ইতিহাসের বই পড়েন। সেখান থেকে সংকলন করা গল্পগুলো আমাদের শোনান। আমাদের খুব ভালো লাগে। তারপর পন্ডিতজি শুরু করলেন আর এক অভিশাপের কাহিনী। তিনি শুরু করলেন, চতুর্দশ লুইয়ের রাজস্ব বিভাগের নিয়ন্ত্রক ছিলেন নিকোলাস ফুকুয়েট, যিনি কিনা কিছু উৎসবে এ ডায়মন্ডটি নিজের শোভাবর্ধনের জন্য ব্যবহার করেছিলেন। এর কিছুদিন পরেই রাজার সাথে কিছু কারণে তার সম্পর্ক খারাপ হয় এবং তাকে ফ্রান্স থেকে নির্বাসন দেয়া হয়। পরবর্তীতে রাজা এ শাস্তি পরিবর্তন করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। পিগ্নেরল দূর্গে ফুকুয়েটকে ১৫ বছর বন্দী রাখা হয়। পরবর্তীতে উত্তরাধিকার সূত্রে এ ডায়মন্ডটি পান রাজা ষোড়শ লুই। তাই স্ত্রী মেরি অ্যান্টোইনেট এটি ব্যবহার করতেন। ফরাসী বিদ্রোহে দুজনেরই শিরোচ্ছেদ করা হয়েছিলো।একসময় এ ডায়মন্ডটি যায় ইংল্যান্ডের লর্ড ফ্রান্সিস হোপের কাছে। তিনি আমেরিকান এক নারীকে বিয়ে করেছিলেন। দুজনেরই টাকা ওড়ানোর অভ্যাস ছিলো। ফলে একসময় তারা ডায়মন্ডটি বেঁচে দেন এবং পরবর্তীতে দারিদ্র্য তাদের আরো ঘিরে ধরেছিলো। ডাচ রত্ন ব্যবসায়ী উইলহেল্‌ম ফল্‌সের হাতে ডায়মন্ডটি পড়লে তিনি এটিকে আবারো কেটেছিলেন। শেষ পর্যন্ত নিজের ছেলের হাতে তিনি খুন হন। ছেলেটি নিজেও আত্মহত্যা করেছিলো। গ্রীক বণিক সাইমন মাওন্‌কারিড্‌স একবার ডায়মন্ডটির মালিক হয়েছিলেন। খাঁড়া পাহাড় থেকে গাড়িসহ পড়ে গিয়ে স্ত্রী, সন্তানসহ মৃত্যুবরণ করেন তিনি। নীল বর্ণের এ ডায়মন্ডটির সর্বশেষ মালিক ছিলেন আমেরিকার নাগরিক এভালিন ওয়ালশ ম্যাকলীন। ডায়মন্ডটি কেনার আগপর্যন্ত তার জীবন বেশ চমৎকারভাবেই কাটছিলো। ডায়মন্ডটি তিনি মাঝে মাঝেই গলায় ঝোলাতেন। এমনকি কখনো কখনো নিজের পোষা কুকুরের নেকলেসেও শোভা পেতো সেটি। এরপরই যেন তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। প্রথমেই মারা যান তার শাশুড়ি। এরপর মাত্র নয় বছর বয়সে মারা যায় তার ছেলে। পরবর্তীতে আরেক মহিলার আশায় তাকে ছেড়ে যান তার স্বামী (যদিও তিনি শেষ পর্যন্ত এক মানসিক হাসপাতালে মারা যান)। পঁচিশ বছর বয়সে মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ সেবনের ফলে মারা যায় তার মেয়ে। অর্থ সংকটে ভুগে নিজের সহায়-সম্পদ বিক্রি করতে বাধ্য হন তিনি। ঋণগ্রস্ত অবস্থায়ই মারা যান এভালিন। এভালিনের বেঁচে থাকা সন্তানেরা এ ডায়মন্ডটি হ্যারি উইনস্টন নামে আরেক লোকের কাছে বিক্রি করে দেন। নয় বছর পর তিনি এ ডায়মন্ডটি স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্টোরিতে কিছু অর্থের বিনিময়ে ডাকযোগে পাঠিয়ে দেন। সেই ডায়মন্ড নিয়ে যাওয়া ডাকপিয়ন জেমস টড এক ট্রাক দুর্ঘটনার শিকার হয়েও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে। কিছুদিন পরই বেচারার স্ত্রী ও পোষা কুকুরটি মারা যায়। আরেকটি দুর্ঘটনায় মাথাতেও আঘাত পেয়েছিলেন টড। আরেকবার তার বাড়িতেও আগুন ধরে গিয়েছিলো। পরপর পন্ডিতজি র লোমহর্ষক কাহিনী শুনে আমরা অবাক হয়ে গেলাম। প্রবীর বললো, আর গাঁজাখুরি গল্প শুনবো না। অরূপ বললো, আরে শোন না বাপু, ইতিহাসের ঘটনা। বেশ ভালো লাগছে। পন্ডিতজি বললেন, তোমরা ছোট এখন। জেনে রাখতে তো আর দোষ নেই। পন্ডডিতজি বললেন, অবশেষে ১৯৫৮ সাল থেকে ডায়মন্ডটি স্মিথসোনিয়ান মিউজিয়ামেই আছে। এরপর থেকে একে ঘিরে আর কোনো দুর্ঘটনার কথা শোনা যায় নি।১৯৯১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের কথা। অস্ট্রিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের ওট্‌জাল পর্বতমালায় খুঁজে পাওয়া গেলো প্রায় ৩,৩০০ বছরের পুরনো এক প্রাকৃতিক মমির সন্ধান। জায়গার নাম অনুযায়ী মমিটির নাম রাখা হলো ওটজি। সন্ধান পাবার বছরখানেক পর থেকেই ওটজিকে ঘিরে এমন সব কান্ডকারখানা ঘটতে থাকলো যে, লোকে তাকে অভিশপ্ত ভাবা শুরু করে দিলো।ওটজিকে প্রথম দেখতে পান জার্মান ট্যুরিস্ট হেলমুট সাইমন। ২০০৪ সালে হাইকিংয়ের সময় পড়ে গিয়ে মারা যান তিনি। তিনি যে জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রথম ওটজিকে দেখেছিলেন, এর কাছাকাছি জায়গাতেই তার মৃত্যু হয়। সাইমনের নিখোঁজ হবার খবর পাওয়া গেলে তাকে খুঁজে বের করতে এক উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয় যার প্রধান ছিলেন ডিয়েটার ওয়ারনেক। সাইমনের মৃতদেহ খুঁজে পাবার পর আয়োজন করা হয় শেষকৃত্যানুষ্ঠানের। এর এক ঘন্টার মাথায় হার্ট অ্যাটাকে মারা যান ওয়ারনেক। এপ্রিলে মাল্টিপল স্ক্লেরোসিসে মারা যান প্রত্নতত্ত্ববিদ কন্‌রাড স্পিন্ডলার যিনি প্রথম ওটজির দেহটি পরীক্ষা করেছিলেন। ওটজিকে নিয়ে পরীক্ষা করা ফরেনসিক টিমের প্রধান রেইনার হেন তাকে নিয়ে এক লেকচার দিতে যাবার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। কার্ট ফ্রিৎজ নামক যে পর্বতারোহী হেনকে ওটজির কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনিও তুষারধ্বসে মারা যান। আবার ওটজিকে বরফের নিচ থেকে তুলে আনার দৃশ্য ধারণ করা অস্ট্রিয়ান সাংবাদিক রেইনার হোয়েলজ্‌ল মারা যান ব্রেইন টিউমারে। এখনের ঘটনাটি একটু অদ্ভুত। এজন্য ১৭০২ সালের উত্তর ইয়র্কশায়ারে চলে যেতে হবে আমাদের। থমাস বাস্‌বি নামক এক লোক শ্বশুরের সাথে বিবাদে জড়িয়ে তাকে খুন করে বসে। বাস্‌বির আবার মাঝে মাঝেই মদ্যপানের অভ্যাস ছিলো। তার প্রিয় চেয়ারে তার শ্বশুর বসায় তিনি তাকে খুন করেছিলেন! এরপর যথারীতি পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। বাস্‌বির মৃত্যুদন্ড কার্যকরের আগে তিনি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি চান একবার সেই পানশালায় যাবার। তারপর সেখানে গিয়ে তিনি অভিশাপ দিয়ে আসেন যে, তার চেয়ারে যে লোকই বসবে, শীঘ্রই তার মৃত্যু হবে। বাস্‌বির এমন অভিশাপের কথা শুনে তখনকার সময়ের মানুষ ভয়ে আর সেই চেয়ারে বসতে সাহস পেত না। এরপর একসময় আসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। পানশালাটিতে প্রায় সময়ই বিমান বাহিনীর সদস্যরা ভিড় জমাতেন। খেয়াল করে দেখা গেলো- যারা বাস্‌বির সেই চেয়ারটিতে বসছেন, তারা কেউই আর যুদ্ধ থেকে ফেরত আসেন নি! পরবর্তীকালে রয়্যাল এয়ার ফোর্সের দুজন সদস্য, এক মিস্ত্রী, এক শ্রমিক এবং এক মালামাল সরবরাহকারী ব্যক্তি এ চেয়ারে বসেছিলেন। এদের প্রত্যেকেই কোনো না কোনো দুর্ঘটনায় মারা যান। সব শেষে পানশালার মালিক নিজেও এতে ভয় পেয়ে যান। তিনি এরপর থার্স্ক মিউজিয়ামে এ চেয়ারটি দিয়ে দেন। সেখানেও চেয়ারটিকে দেয়ালের সাথে ঝুলিয়ে রাখা আছে যাতে কেউ সেখানে বসতে না পারে! অর্থাৎ এতসব অপঘাতে মৃত্যু দেখে মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষও ‘বাস্‌বির অভিশাপ’ নামক কুসংস্কারটিতে বিশ্বাস করেছিলো।রাসপুতিন অনেকের কাছে পরিচিত ছিলেন এক জাদুকর হিসেবে। সেন্ট পিটার্সবার্গের অভিজাত ব্যক্তিবর্গ তার এমন কাজকর্মে মুগ্ধ হলেও তার মতো একজন লোকের সাথে সম্রাজ্ঞীর ঘনিষ্ঠতাকে তারা সহজভাবে নিতে পারে নি। তাই এরপর থেকে নানা কারণে শুরু হয় তাকে হত্যার নানা প্রচেষ্টা। বিষ খাইয়ে, অমানুষিকভাবে পিটিয়ে, এমনকি বেশ কয়েকটি গুলি গায়ে লাগার পরও বেঁচে যান তিনি। অবশ্য শেষ রক্ষা আর হয় নি। শেষ পর্যন্ত হাত-পা বেঁধে এক নদীতে ফেলে দিলে সেখানেই ডুবে মৃত্যু হয় বেচারার। মৃত্যুর আগে রাসপুতিন সম্রাটের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেখানে তিনি তাকে খুন করা হলে রাশিয়ার রাজ পরিবারের কী হবে সেই সম্পর্কে চমৎকার ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন যে, আর বছরখানেকের মাঝেই সপরিবারে নিহত হবেন সম্রাট এবং সত্যি সত্যিই সেটি ঘটেছিলো। মাত্র দেড় বছরের মাঝেই সম্রাট, সম্রাজ্ঞী এবং তাদের পাঁচ সন্তান নৃশংসভাবে খুন হয়েছিলেন।

গ্রিগরি রাসপুতিনের নাম শুনেছেন অনেকেই। সাইবেরিয়ার কৃষক পরিবারে জন্ম নেয়া রাসপুতিন তার অদ্ভুত রোগ সারানোর ক্ষমতার বলে একসময় রাশিয়ার সম্রাট দ্বিতীয় নিকোলাসের সভায় জায়গা করে নিতে সক্ষম হন। রাসপুতিনের করা ভবিষ্যৎ বাণীগুলোর কার্যকারিতা দেখে সম্রাজ্ঞী আলেকজান্দ্রা ফিওদোরোভ্‌না তাকে তার ব্যক্তিগত পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেন। রাসপুতিন ভবিষ্যৎ বলতে পারতেন। তিনি খুব কামুক ছিলেন। রাসপুতিন মরার আগে যেকথাগুলো বলেছিলেন সব সত্যি হয়েছিলো।ধীরেন বললো, অমিয়ভূষণের কামুকতার গল্পটা একটু বলো না পন্ডিতজি। ।পন্ডিতজি বললো,এটা কাল্পনিক গল্প। ইতিহাসের সঙ্গে এর মিল খুঁজতে গেলে হবে না।

ভুল করবে।তার নাম অমিয়ভূষণ। রাজু বললো, আর আপত্তি থাকা উচিত নয়।আমরা আবার একপ্রস্থ চা পান হলো। রাজাকে দেখতে অনেক লোক জড়ো হয়েছে। রাজা খুব খুশি। চারিদিকে রাজার জয়ধ্ব অভিবাদন গ। অনেকে মাল্যদান করছে। হঠাৎ তার নজএ পরিহিতা নারীর প্রতি। রাজা দেখলেন তার পরনে পোশাক প্রায় নেই বললেই চলে। অথচ গায়ে দামী স্বর্ণঅলঙ্কার।প্রথমে রাজার ক্রোধ হলো। তারপর এক সেনা কে নির্দেশ দিলেন অই নারীকে সবার আড়ালে আনার জন্য। রাজার আদেশ পালিত হলো। রাজা আড়ালে ডাকলেন রমণীকে,নির্জনে।কারণ লোকলজ্জা বলে একটা কথা আছে। আড়ালে জিজ্ঞাসা করলেন,এই বেশে তুমি রাজাকে দেখতে এসেছো এত লোকের সামনে। তোমার সাহস তো কম নয়। রাজা দেখলেন,রমণী সুন্দরী। স্তনযুগল যেনো আহ্বান করছে তাকে,যৌনক্রিড়ায়। রমণী বললেন,আমার কাছে আজ পর্যন্ত নারী, পুরুষের ভেদ চোখে পরে নাই। তাই নারীর কাছে আর এক নারীর লজ্জা কিসের?আমি যতজন পুরুষের সান্নিধ্যে এসেছি তারা সকলেই নপুংসক সমান।নিতান্তই কাপুরুষ।রাজা বললেন,তুমি নারী হয়ে এত নির্লজ্জ কেন? রাজা বললেন,তোমার নাম? নারী বললো,রতিপ্রিয়া। সে আবার বললো, আপনার স্ত্রীসংখ্যা কতজন রাজন ? রাজা বললেন,চারজন।কেন? রমণী বললেন,আপনি অভয় দিলে, বলি একটা কথা। রাজা বললেন,ভয় নেই। তোমার সাহস দেখে আমি খুশি। তোমার রূপেও আমি মুগ্ধ। চলো জঙ্গলে যাই।সেখানেই কথা বলা যাবে। রাজা প্রহরীদের সংবাদ প্রেরণ করে রতিকে নিয়ে আড়ালে এলেন। জঙ্গলে গিয়ে রমণী বললেন, আপনি আপনার রাণীদের যৌন আনন্দ দিয়ে তৃপ্ত করতে পেরেছেন কি?রাজা বললেন,তোমার ভয় না হলে, পরীক্ষা করে দেখতে পারো সুন্দরী,তবে আমার মনে হয় আমি পুরোপুরি সফল নই। । আমি নিজেকে তোমার নিকট সমর্পণ করছি। তুমি এই যৌনশাস্ত্র পড়েছো, অনুভব করেছো।তাই অন্য রমণীর থেকে তোমার ককাছে প্রত্যাশা আমার ববেশি। তোমার সব দায়ীত্ব আজ থেকে আমার হলো।তোমার সকল আশা পূরণ করবো আমি। রতি বললেন,আমি বহুবল্লভা। শুনুন রাজন আমার প্রেমিক উমাপদর কথা।উমাপদ একবার আমার প্রেমে পরলেন। এতদিন গীতা,মহাভারত ঘাঁটাঘাঁটি করে ছাপান্ন বছর বয়সে নতুন করে এক সুন্দরী নারীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন উমাপদ। তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে বর্তমান। আবার জাঁহাবাজ স্ত্রীকে থোরাই তোয়াক্কা না করে কোন সাহসে তিনি এ কাজ করলেন।গল্পটা মনে করুন তার মুখেই শুনছেন রাজন। আমি তার মতোই বর্ণনা করি আপনার সকাশে। আমি উমাপদ পাল। রাজার অন্যতম সেনাপতি। মাইনে নেহাৎ কম নয়। প্রায় ষাট হাজার মুদ্রার কাছাকাছি। তাছাড়া উপরি পাওনা বিশ হাজার মুদ্রার কাছাকাছি। তার স্ত্রী বিষ খেয়েছেন। তাকে নিয়ে ছোটাছুটি করলো আত্মীয়স্বজন,পাড়ার লোকজন।প্রায় এক লাখ মুদ্রা খরচ করে তাকে বাঁচিয়ে আনা হলো। তা না হলে কারাগার বাস হত অবধারিত। পাড়ার লোক গালাগালি করলো। আমি সোজা সাপটা ছেলে মেয়েদের এক জায়গায় করে স্ত্রীকে বললাম,তোমার মরার প্রয়োজন নেই। আমার মাইনে ষাট হাজার মুদ্রা প্রতি মাসে। সংসার খরচ বাবদ চল্লিশ আর জমানো বাবদ কুড়ি। মোট ষাট হাজার প্রতি মাসে তুলে দেবো তোমার হাতে। আর বেশি বিরক্ত করলে আমি এ বাড়িতে থাকবো না। আসবো না। আমার থাকার জায়গা আছে। গিন্নি তবু তেড়েমেরে বললো,তুমি সব ভুলে গেলে। অর্থই সব হলো। আমাদের ভালোবাসার কোনো দাম নেই। আমি কি করে বোঝাই, তোমাদের ভালোবাসা নিজেদের স্বার্থের জন্য। আর আমার ভালোবাসার জন আমাকে ভালোবাসে স্বার্থহীনভাবে। আমার প্রতিটি অনুভবের কথা সে বোঝে। আমার আত্মার উত্তরণ ঘটিয়ে আমাকে উন্নত করে। সমাজের উচিত আমাদের প্রেমকে কুর্নিশ করা। তোমার মগজে এসব কথা ঢুকবে না। তোমরা পৃথিবীতে এসেছো খেতে,শুতে আর হাগতে। তারপর চলে যাবে ভিখারির মত খালি আত্মায়। আর আমরা প্রেমিক যারা তারা মরবো আত্মার পূর্ণ দর্শনে। সেদিন থেকে গিন্নি চুপ করেই আছে। সে বলে,থাক তবু তো কাছে আছে। যা করছে করুক গো। মরুক গো। আবার পরক্ষণেই বলে,হাগো তোমার মনে এই ছিলো। এতদিনের সংসার, আর আমাদের ভুলে গেলে। আমি কি করে বোঝাই,আমি তোমাদের ভুলি নাই। আমি শুধু একটু নিজের আত্মার উন্নয়ন ঘটাতে চাইছি। একটু শরীরের আনাচে কানাচে অতৃপ্ত আশা গুলোকে সাজাতে চাইছি। আমাকে একটু ভাসতে দাও, “আমাকে আমার মত থাকতে দাও”…আর অন্য কিছু নয়। কদিনের অতিথি আমরা এই পৃথিবীতে। কেউ থাকবো না। তবু যতদিন আছি একটু আনন্দে থাকি। তুমি তোমার আনন্দ খুঁজে নাও,আমি আমার মত থাকি। এইটুকু ত্যাগস্বীকার করো। তুমি,আমি,ছেলে,মেয়ে কেউ কারো নই। বেঁচে থাকা অবস্থায় এটুকু বুঝতে দাও। মরে যাওয়ার পরে সমাজের লোক সবাই বলে,কেউ কারো নয় গো। তবে বেঁচে থাকতে কেনো নয়। এই সত্য কথাটা কেন তুমি অস্বীকার করছো। কাউকে পর ভেবো না। আপনজনও কেউ নয়। শুধু দেওয়া নেওয়ার খেলা থেকে আমাকে দুদন্ড শান্তি দাও। রতি আমার জীবনে যে আনন্দ,রস,জ্ঞান এনেছেন তোমার ক্ষমতা নেই সেই স্তরে ওঠার। আমি দিবা,নিশি রতির প্রেমে আবিষ্ট।তাহলে রাজন, বলুন কোন আনন্দ পেলে মানুষ বয়স মানে না। আত্মীয়স্বজন মানে না। বেরিয়ে আসে সংসারের শৃঙ্খল থেকে। রাজা বললেন,আমি সব শুনলাম। তুমি আজ থেকে শুধু আমার। আমাকে তোমার উপযুক্ত করে গড়ে তোলো। আমি আবার নতুন করে বাঁচতে চাই আনন্দে। শুধু আনন্দ। আর কিছু নয়। কিশোরী বয়স থেকেই নরনারীর যৌন বিষয়ে আমি আগ্রহী। আমি কাম বিষয়ে গ্রন্থ লিখবো। আমার দীর্ঘ দিনের আশা। সহজ,সরল করে,সাধারণ লোকের বোঝার মত করে । বাৎসায়নের কামশাস্ত্র, বা আরও প্রাচীন অনেক কামশাস্ত্র থেকে নির্যাসটুকু নিয়ে সহজ সরল ভাষায় নতুন করে লিপিবদ্ধ করবো। আরও অনেক নতুন তথ্য যোগ করবো যাতে সকলে হৃদয়ঙ্গম করতে পারে। আর সেই কাম শাস্ত্রের নাম রাখবো,শরীর এক বাঁশী। এর জন্য আপনার সাহায্য প্রার্থনা করি। অর্থবল,মনোবল সকল কিছুই আপনার কাছে আশা করি পাবো। রাজা বললেন,নিশ্চয় পাবে রতি। রতি বললেন, আচ্ছা আপনি বলুন, আপনি একটিমাত্র স্ত্রীকেও যৌনতৃপ্তি দিতে পেরেছেন কি?রাজা ভাবলেন,এই নারী বিদূষিও বটে। শুধুমাত্র সাধারণ যৌনবিলাসি নয়। তারপর রাজা বললেন,সেভাবে ভাবিনি কোনোদিন।তবে তোমার চিন্তনে,মননে আমি আনন্দিত এবং আমি সহমত। আমি তেমাকে অবশ্যই সাহায্য করবো। রমণী রতিপ্রিয়া বললেন,আমি জানি চারটি স্ত্রীকে যৌনতৃপ্ত করা, এক ব্যস্ত রাজার পক্ষে সম্ভব নয়। তাদের একসাথে নিয়ে কোনোদিন ভ্রমণ করেছেন কোনোদিন। অন্দরমহলে বন্দি থাকতে থাকতে তাদের মন প্রাণ হাঁপিয়ে ওঠে। তখন তাদের যৌনক্রিয়া এক যান্ত্রিক পদ্ধতি হয়ে ওঠে। আমার প্রাণও এক জায়গায় থেকে হাঁপিয়ে উঠেছে। ভ্রমণ সফল কামের জন্য একান্ত প্রয়োজন। আমাকে কামতৃপ্ত করতে পারেনি কোনো পুরুষ আজ পর্যন্ত। তাই আমি স্বল্পবাসে থাকি। কাউকে যথার্থ পুরুষ বলে মনে করি না। তাই আমার ভয় নাই। এই দেখুন আমার স্তনযুগল। আপনাকে মিলনের আহ্বান জানায়।প্রাচীন যুগে স্তন অন্য দেহের মতো উন্মুক্ত থাকতো। তখন কোনো আপত্তি ছিলো না সমাজের।তাহলে আজ কেন? রাজা কামে আসক্ত হয়ে পরলেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলেন।মনে মনে ভাবলেন,আমি রাজা। সহজে ধরা দিলে হবে না। তাই তো আমি রাজা। রমণী বললেন, আপনি প্রথম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এই স্তনযুগল দেখেই অনেকের রেতঃপাত হয়ে যায়। কাপুরুষের মতো জড়িয়ে ধরে অনেকে। কিন্তু পুরোপুরি সন্তুষ্ট করতে পারে না। ধর্ষকে ধর্ষণ করে নিজের অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য।পশুবৎ আচরণ তাদের। শতধিক তাদের। কিন্তু যে স্বামী, স্ত্রীকে অগ্নি স্বাক্ষী রেখে সকল সুখ দেবার পণ করে। সে যদি বাড়িতে এসে ফুলের বিছানায় রতিসুখ না দিতে পারে তবে সে তো ধর্ষেণরই নামান্তর। তাই কোনো পুরুষকে আমি পুরুষ বলি না। রাজা খুব চিন্তিত হলেন। তিনি এ বিষয়ে কথা বলার আগে কয়েকদিন সময় চাইলেন। রতিপ্রিয়া বললেন,আপনি তো চলে যাবেন। রাজা আশ্বাস দিলেন,তোমাকে রতিতৃপ্ত করার আগে,তোমার সমস্ত ইচ্ছা আমি পূরণ করবো।

প্রথম দর্শনেই আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। তাই তোমার গ্রন্থ প্রকাশের আগে আমি এ গ্রাম ছাড়বো না। তুমি লেখো নবীন কামশাস্ত্র চিরনবীনের জন্য। তারা যেনো তাদের ক্ষণিকের যৌবনের স্বাদ পায়। মামূলি গন্ডি ছাড়িয়ে যৌনমিলন সফল হোক নারী পুরুষের। আমি তোমার কাছে বন্দি হয়ে থাকতে চাই প্রিয়া। রতি বললেন,তাহলে আপনার রাজপাট কিভাবে চলবে। রাজা বললেন,চলবে, আমি এখান থেকেই সমস্ত দেশ পরিচালনা করবো।আমার লোকবল আছে। সভায় অনেক রত্ন আছে।আমি তোমাকে আমার কাছে রাখতে চাই।তুমি কি রাজী?রতি বললেন,অবশ্যই রাজী।তবে কয়েকদিন সময় আমাকে দিন। রাজা বললেন,তাই হবে। তারপর দুজনেই স্বস্থানে গমণ করলেন। রাজা সেনাপতিকে নির্দেশ দিলেন,এখানে রাজপ্রাসাদ গড়ে তোলো। সমস্ত ব্যবস্থা এই গ্রামে করো। এটি আমার দ্বিতীয় রাজধানী হোক। রাজার নির্দেশে সেখানে গড়ে উঠলো বাজার,হাট,সড়ক,ব্রীজ সবকিছু। কেউ জানলো না, এক রমণীর রমনীয় আকর্ষণে রাজা বাঁধা পরেছেন। সেই রমণীর জন্য এই গ্রাম রাজার দ্বিতীয় রাজধানী হলো। কয়েক দিন পরে রাজা রতিপ্রিয়াকে প্রাসাদে আসতে বললেন। রতিপ্রিয়া বললেন,আমার গ্রামের সকলে সুখে থাকলে আমি সুখি হবো এবং অপরকে সুখী করতে পারবো। রাজা আশ্বর্য হলেন। যে নারী পরের সুখে সুখী সে গ্রামের দেবীস্বরূপা। তাকে শত চুম্বনে সিক্ত করি। রাজা ভাবেন আর তার প্রধান পরামর্শদাতা ও সর্বশাস্ত্রে পারদর্শী অমিয়ভূষণের পরামর্শ মতো কাজ করেন। অমিয় বলেন,এ রমণীকুলের শ্রেষ্ঠা রমণী। এনাকে সাবধানে বুঝতে হবে। খোলা তলোয়ার আনাড়ির হাতে গেলে কেটে,ছরে গিয়ে রক্তাক্ত হবার ভয় থাকে। তাই হে রাজন সাবধান।রাজা অই গ্রামের সকলের জন্য সুখ,সুবিধার ব্যবস্থা করলেন। সকলের পাকা বাড়ি হলো। প্রত্যেক পরিবার পিছু দুজনে কাজ পেলো। গ্রামের সমস্ত পুকুরে মাছ চাষ হলো। কৃষিকাজ শুরু হলো আশেপাশের সমস্ত গ্রামে তোড়জোর করে। সকলকে রাজার ভান্ডার থেকে অর্থ সাহায্য করা হলো। কিছুদিনের মধ্যেই এলাকার উন্নয়ন বাড়তে লাগলো।রতিপ্রিয়া বুঝতে পারলো না কি করে সব উল্টোপাল্টা হয়ে গেলো। গ্রামের আশেপাশে কোনো অভাবের ছাপ নেই। আজ তার মনের গোপন আশা পূরণ হয়েছে। সে একা তার আপনজনদের অভাব দূর করতে পারতো না। রাজা তার মনোবাসনা পূর্ণ করেছেন। রাজার কাছে সে কৃতজ্ঞ। এবার রাজাকে পরিতৃপ্ত করা তার কাজ। তার আত্মার উন্নয়ন ঘটানোও তার প্রধান কাজ। এ কাজ তাকে করতেই হবে।সে ছোটো থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহী। কিন্তু সমাজ বাধা হয়ে দাঁড়ায়েছিলো। তাই সে লুকিয়ে সব কাজ করতো।বারো বছর বয়সে তার প্রথম গুরুর কাছে শিখতো বিভিন্ন শাস্ত্রের কথা। পড়ানোর সময় তার সদ্য জাগ্রত কুঁড়ি সদৃশ বুকে হাত রাখেন গুরু। তারপর বনের নিভৃতে কচি বয়সে তার উপর বলাৎকার হলো। লৌহশলাকা সম লিঙ্গদন্ডের প্রবেশে ছিন্ন যোনী রক্তাক্ত। তবু এ ঘটনা কাউকে বলেনি, রতি। কারণ তাহলে তার শিক্ষা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। গুরুর কাছে দিনের পর দিন ধর্ষিত তার দেহ,মন। একদিন বিরক্ত হয়ে সে অন্য গুরুর কাছে গেলো। তখন তার বয়স পনেরো বছর। বাড়িতে বাবা নেই। মারা গেছেন।মা বিবাহ দিতে চাইলেন। রতি মাকে বললেন,বিবাহের জন্য জন্ম আমার নয়। আমি পড়বো। মা জানতেন তার অন্তরের সব কথা। কিন্তু সেই মা কে হাসুখালির ডাকাতরা একদিন ধরে নিয়ে গেলো কোথায়,কেউ জানে না। রতিও জানে না। তবু সে ভেঙ্গে পরে নি। মাত্র পনেরো বছর বয়সে রতি অনাথ হলো। কয়েক মাস পরে সে অন্য গুরুর কাছে থাকতো।আশ্রমের কাজ করে দিতো। আর তার বদলে গুরুদেব তাকে খেতে দিতো ও শিক্ষাদান করতো।সে নতুন গুরুর কাছে গেলো ইচ্ছে করে। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলো গুরুর কাছে। আরও জানতে হবে তাকে সব গুপ্ত বিষয়ে। এবার রতি গুরুদেবকে সরাসরি বললেন,আমি গুপ্তশাস্ত্র সম্বন্ধে জানতে চাই। আমাকে শিক্ষাদান করুন দয়া করে। বশীকরণ,সম্মোহন,তৃপ্তকাম সমস্ত বিষয় আমাকে শেখান। গুরু বললেন,এই প্রথম আমি কোনো যুবতীর কাছে সোজাসাপটা কথা শুনলাম। এখন তোমার বয়স কুড়ি বছর। গুপ্তবিদ্যা তোমাকে শেখানো যেতে পারে।গুরু মহাখুশি হয়ে তাকে শিক্ষাদানে রাজী হলেন। তখন রতি সুন্দরী। যৌন নির্যাতন বিষয়ে বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা তার আছে। কিন্তু ভালোলাগার সন্ধান এবার পেলো। এবার সে আরও ভালো শিক্ষা পেলো। গুরু যখন বলেন কামশাস্ত্রের কথা তখন তার যোনীদেশ সিক্ত হয়ে ওঠে। রতি চায় গুরু যদি তার যোনীদেশ চোষণ করে তো ভালো হয়। কিন্তু বলে কি করে। যতই হোক গুরু। তখন সে গুরুকে আকর্ষিত করার জন্য গুরুর কাছে শেখা ষোলোকলা অস্ত্রের সাহায্য নিলো। এযে গুরুমারা বিদ্যা। গুরুর একজন বাইশ বছরের পুরুষ ছাত্র আছে। কিন্তু সে তো আনাড়ি,অমনোযোগী। তাকে দিয়ে কাজ হবে না। গুরুর বয়স তিরিশ কি বত্রিশ বছর হবে। তারপর তিনি সুনুরি, অভিজ্ঞ পুরুষ। তাকেই প্রেমের শেকল পরাতে হবে। যথারীতি গুরুর শেখানো বিদ্যায় গুরু শেকল পরলেন।তার প্রেমে বাঁধা পরলেন। একরাতে রতি গুরুর ঘরে ঢুকে তার লিঙ্গ মুখে নিয়ে চুষে উত্থিত করলো।

কিছুক্ষণ পরেই গুরু রতির মুখ থেকে লিঙ্গ টেনে বার করে রতির সিক্ত যোনীতে আমূল প্রবিষ্ট করলেন। রতি ভাবলেন,এবার পুরুষ পেয়েছি। শীৎকার ধ্বনিতে আকাশ বাতাস মুখরিত। গুরু অই অবস্থায় রতির কানের লতি কামড়ে ধরলেন। বুকের কালো বোঁটা কামড়ে আবার ছেড়ে দিলেন। রতি ভাবছে,বড্ড বেশি উত্তজিত হয়ে পরেছেন গুরু। আর কিছুক্ষণ পরেই স্বর্গের আনন্দ পাবো। কিন্তু ভুল ভেঙ্গে গেলো। গুরু বীর্যস্খলন করে বললেন,আমি ব্যর্থ হলাম। পারলাম না। আরও ধৈর্য্যের প্রয়োজন। বাড়াতে হবে ধারণশক্তি। রতি বিরক্ত হয়ে বলে উঠলেন,আপনার শিক্ষা কি তাহলে ব্যর্থ। গুরু বললেন,শিক্ষা ব্যর্থ নয়। আচরণ করা কঠিন। তারপর তোমার মতো সুন্দরী। তোমার মতো নারীর সমকক্ষ পাল্লাদার পুরুষ পাওয়া সহজ নয়। গুরুর কথা আজও সত্য। রতি স্বীকার করে, সে আজও মনের মত বির্যবান পুরুষের সন্ধান পায় নি। ধারণশক্তিধর পুরুষের সংখ্যা নিতান্তই লঘু। নিশ্চয় একদিন তার সন্ধান পাবো। রতিপ্রিয়ার গ্রামের ভোল পাল্টে গেলো তার নিজেের আশীর্বাদে। রাজা মনে মনে ভাবছেন,এই নারীরত্নকে তিনি মনের মণিকোঠায় সাজিয়ে গুছিয়ে রাখবেন। চার চারটি নারী সম্ভোগেও তার দেহ,আত্মা তৃপ্ত হয় নি। রাণীরা মধ্যপথে রাস্তা গুলিয়ে ফেলে।সঠিক শিক্ষার অভাব আর কি।রাজা মনে মনে ভাবছেন এইসব কথা। একটা রাতও রাজার ভালোভাবে পার হয় নি। যৌন ইন্দ্রিয়সুখ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। তিনি বিড় বিড় করছেন নিজের মনে মনে,প্রথম রাণীকে বললে চোষণ,মর্দন, লেহনে রাজী হয় না। শরীরের যে একটা ভাষা আছে তা পড়তে জানে না। নিজেও সক্রিয় হয় না আবার হতেও দেয় না। দ্বিতীয়জন দুর্মুখ। তৃতীয়জন গল্প শোনায় বেশি, কাজের থেকে। আর চতুর্থজন ঘুম কাতুরে। তাকে মৃতদেহের মতো বোধ হয়। ঠান্ডা,বরফ,শীতল উলঙ্গ দেহ। পাশে থাকলেও স্পর্শে মন যায় না। রাজা ভাবে,এখানেই বাকী জীবনটা কাটানো যাবে। মনের মতো নারী পেয়েছি। স্বর্গ আর দূরে নেই মনে হচ্ছে।

এদিকে প্রধান পরামর্শদাতা ও পন্ডিত রাজাকে পরামর্শ দিলেন,বেশি ছটফট করবেন না। আমি একবার অই নারীকে দেখতে চাই। তার সঙ্গে একান্তে কথা বলতে চাই। আপনি রাজী তো? রাজা বলেন,রাজী। কিন্তু তার দেহআমি কাউকে স্পর্শ করতে দেবো না। যদি জানতে পারি,তার গর্দান যাবে। পন্ডিত রাসপুতিন রাজী হলেন। কিন্তু মনে তার অন্য ভাবনা।

এক গভীর চাঁদনী নিশিথে রাসপুতিন না, না অমিয়ভূষণ ও রতিপ্রিয়া, হাসিমুখ অরণ্যে,উপস্থিত হলো। সেই অরণ্যে আর কেউ নেই। অমিয় শরীরচর্চা করেন। তার আজানুলম্বিত বাহু।দীর্ঘ আকারে,মনোমুগ্ধকর সম্ভাষণে রতিপ্রিয়া খুশি হলো।রতিপ্রিয়া বললো,আমি আপনাকে চিনেছি। আপনি আমার সেই আকাঙ্খিত পুরুষ। আসুন মিলিত হই। অমিয় বললেন,চারদিকে রাজার চর ঘোরঘুরি করছে। গর্দান যাবে আমার। রতিপ্রিয়া বললেন,আমি এই জঙ্গলের সব চিনি। এমন গভীর অরণ্যে আমরা ফুলশয্যা সাজাবো কেউ দেখতে পাবে না। অমিয় বললেন,এটাই শেষ ফুলশয্যা হবে না তো? রতিপ্রিয়া বললেন,আপনি কি ভীত? তাহলে সম্পূর্ণ যৌন সফলতা পাওয়া অসম্ভব। যৌনতার অর্থ শুধু দেহ নয়। চোখের চাহনি,গ্রীবা ভঙ্গিমা,পরস্পরের যৌন প্রলাপ, পোশাক,মন,প্রতীক্ষা,পরিণতি সবকিছুর উপর নির্ভর করে কাম সফলতা। অমিয় বললেন,আমি ভীত নই। তবে কথার খেলাপ হবে। তোমার মত সুন্দরীর জন্য সবকিছুই করতে পারি। তারপর শয্যা তৈরি হলো। ফুলের নয়। ঝরা পাতার শয্যা। দুজনে উলঙ্গ হলো। অমিয়র দীর্ঘ লিঙ্গ রতি চুষতে শুরু করলো। অমিয় বললেন,ধীরে নারী। তোমার ওষ্ঠে আমার ওষ্ঠ। তোমার মাইযুগলের বৃন্ত কালো আঙ্গুর। আমি চোষণ করি। কুড়ি মিনিট কেটে গেলো। রতি পাগলীনি প্রায়। তারপর ধীরে ধীরে অমিয় যোনিদেশ দখল করলেন। চর্ব্য,চোষ্য,লেহনের মাধ্যমে নারীর মন মাতানোর খেলায় পারদর্শী অমিয় রতিকে কামবাণে বিদ্ধ করলেন। রতির উপোসী যোনীদেশ। পাগলী রতি, ঠেলে ফেললেন অমিয়কে পাতার বিছানায় । অমিয় হাসিমুখে সব আদর গ্রহণ করলেন।বিলাপ করলেন,পাগলের মতো,আমাকে গর্দান দিতে হলেও আর দুঃখ নাই। আমি তৃপ্ত। তুমি কি তৃপ্ত নারী। অমিয় দেখলেন,রতি বলছেন,হ্যাঁ প্রিয়। তুমিই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ পুরুষ। বলতে বলতেই আবার তিনি জড়িয়ে ধরলেন আশার পুরুষকে। তারপর শুয়ে থাকলেন অনেকক্ষণ। গোপনে অমিয় বললেন,তুমি রাজার আশ্রয়ে থাকো। আমি তোমাকে ঠিক সুখে রাখবো। তারপর রতি রাজার আশ্রয়ে গেলেন গ্রামবাসীদের কাছে বিদায় নিয়ে। সবাই সাগ্রহে পৌঁছে দিলো সুন্দরী রতিকে।আজ সে সুন্দর পোশাক পরেছে। রাজা বললেন,কি করে হলো তোমার এত বেশভূষা। রতি বললেন,তোমার জন্য রাজা। আজ আমি পছন্দের পুরুষ পেয়েছি তাই। রাজা খুব খুশি হলেন। গ্রাম জুড়ে তোড়জোড় শুরু হলো খাওয়া আর নাচ, গানের।রাজা পন্ডিত অমিয়ভূষণকে বললেন,আপনি কি এমন মন্ত্র দিলেন যে রতি পাল্টে গেলো। অমিয় বললেন,আমি আপনার গুণকির্তন করেছি ওর কানে। তাতেই ওর পাগলির মত অবস্থা। বিছানায় গেলে কি করবে এবার দেখুন।যথারীতি রজনীকালে রাজা শয্যায় গেলেন। সেখানে অপেক্ষায় রতি। রতি প্রথমেই রাজাকে উলঙ্গ করলেন। তারপর দেখলেন, রাজামশাই ঘাঘরা তুলে লিঙ্গ প্রবেশ করালেন। তারপর বিলাপের সুরে বললেন, এবার দেখো তোমার কি দশা করি। কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজা হাঁপিয়ে পরলেন। তারপর চিত হয়ে শুয়ে ঘুম। অমিয় একটি পাথরের বাটি রতির হাতে দিয়ে চলে গেলেন। রাজাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে খাইয়ে দিলেন দুধের সঙ্গে মেশানো ঘুমের বড়ি। রাজা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হলেন। তারপর অন্দরমহলের অন্য ঘরে রতি ও অমিয়ভূষণ উলঙ্গ হলেন। অমিয়ভূষণ রতিকে কোলে তুলে দাঁড়িয়ে রতিক্রিয়ায় মত্ত হাতির মতো লাফালেন। প্রায় অর্ধ রজনী পরে রতি চলে এলেন রাজার ঘরে। কেউ জানলো না গোপন কথা।পরের দিন রাজা ওরতি বনে বনে ঘুরলেন। রাজার বায়নামত কাজ করলেন। রতি এদিক ওদিক দেখছেন কিন্তু অমিয়কে দেখতে পাচ্ছেন না। রাজা স্নানের ঘরে গেলে রতি অমিয়র ঘরে দেখলেন আর একজন সুন্দরী তন্বীকে আনন্দ দিতে ব্যস্ত তার সাধের নাগর। রতির রাগ হলো। রজনীকালে অমিয়র ঘরে দেখা হলে রতি বললেন,দিনে অই কন্যাটি কে ছিলো। অমিয় বললেন রাজার বড় রাণীর কন্যা এখানে থাকেন। তিনি বিয়ে করেন নি আমার জন্য। তারও শখ, চাহিদা মেটায় আমি। এই সময়টা তোমার। এসো রতি,আমরা মিলিত হই।রতির ক্রোধ হলেও তা প্রকাশ করে নি। পরের দিন সে রাজাকে নিয়ে চলে গেলো বনে। সেখানে আসল কাম শাস্ত্র শেখালো রাজাকে। রাজা পুঁথির মধ্যে সবকিছু লিপিবদ্ধ করার উপদেশ দিলেন রতিকে। রতির কথামত কাজ করে রাজা আনন্দ পেলেন অনেক বেশি। রতি পুরুষ তৈরির কাজে লেগে পরলো। শরীর পেরিয়ে এক ভালোবাসা তৈরি হলো রাজার প্রতি তার মনে। সে ভাবলো,অমিয় অহংকারী, তাই অন্য নারীতে আসক্ত। কিন্তু রাজা তার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর থেকে নিজের সবকিছু ভুলে গেছে। এ তো ভালোবাসা ছাড়া আর কিছুই নয়। রতিকে সবসময় রাজা চোখে চোখে রাখে। যত্ন করে। এত ভালোবাসা রতি আগে কখনও পায় নি।


তাই রাজাকে নিজের মনের মত করার জন্য গুপ্তশিক্ষা দিতে শুরু করেছে। প্রায় দুবছর পরে রতি রাজাকে যৌনবিদ্যায় সম্পূর্ণ পারদর্শী করে তুললো। অমিয়ভূষণকে তার আর প্রয়োজন হয় না। কিন্তু তাকে এখানে দেখতে সে চায় না। তার পাওয়া প্রথম শক্তিমান পুরুষ অন্যজনের হয়ে গেছে,অনেকের হয়ে গেছে এই নিষ্ঠুর সত্য সে কোনোমতেই সহ্য করতে পারে না। তাই সে রাজাকে বললো,অমিয়ভূষণকে তাড়াও। রাজা বললেন,ঠিক বলেছো তুমি। ওর জ্ঞান আমাকে মানুষ করতে পারে নি। আমি ওর গর্দান নেবো। রতি বললেন,ক্ষমা রাজার শ্রেষ্ঠ গুণ। তুমি ওকে তোমার প্রথম রাজধানীতে পাঠিয়ে দাও।অমিয় ভূষণ চলে এলো রাজার চার রাণীর কাছে। সেখানে রাজার নির্দেশে প্রধান হিসাবে অস্থায়ীপদে নিযুক্ত হলো। রাণীদের প্রতি ভালোবাসা রাজার নেই। এবার অমিয়ভূষণের চোখ গেলো রাণীদের প্রতি। রাণীরা এখন উপোসী ছারপোকার মতো, সে মনে মনে বলে। প্রায় পাঁচ বছর যৌন সঙ্গম তাদের স্থগিত হয়ে আছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। প্রথমে একরাতে সে বড় রাণীর কাছে গেলো। কাম শাস্ত্রে অমিয় পারদর্শী। রাণীকে ঘরে একা পেয়ে বললো,তুমি কি সুন্দরী। আজ পর্যন্ত তোমার মত সুন্দরী দেখি নাই। রাণী বিগলিত হয়ে বললো,তোমার মত সুপুরুষ আমার প্রয়োজন। অমিয় কামকেলি শুরু করে বললো,তুমি সুন্দরী। অথচ রাজা তোমাকে অবহেলা করে।সে এখন অন্য নারীতে আসক্ত। তাহলে তোমরা কেন উপোসী হয়ে দিন কাটাবে। এসো আমরা মিলিতভাবে আনন্দ করি। বড় রাণী সময় চাইলেন। রাণীরা পরামর্শ করে দেখলেন,অমিয় সত্য কথা বলেছে। তারা তার প্রস্তাবে রাজী হলো। এদিকে অন্দরমহলের দাসীদের সেনাপতি ও তার সাথীদের ভোগ করতে দিলো অমিয়। ফলে শাসনকার্যের সমস্ত ক্ষমতা তার হাতের মুঠোয় চলে এলো। অমিয় একপ্রকার রাজা হলো অঘোষিতভাবে। তার প্রখর বুদ্ধির জোরে সে সুশাসনের মাধ্যমে সকলের সুখ,সুবিধার ব্যবস্থা করলো। ফলে অধিবাসীরা তার অধীনে এলো।সকলে বলাবলি করতে শুরু করলো,এইরকম রাজাই প্রয়োজন আমাদের।চার রাণী প্রথম মিলনে বুঝে গেছে পুরুষশ্রেষ্ঠ অমিয়ভূষণকে। তারা তাকেই স্বামী হিসাবে বরণ করে নিলো। উদ্দাম আবেগে ভেসে গেলো পুরোনো সব স্মৃতি। অমিয়ভূষণ যৌনবিদ্যাকে অবশ্যপাঠের অন্তর্ভুক্ত করলো। ফলে নারী পুরুষের সম্বন্ধ ভালো হলো কয়েক বছরের মধ্যেই। পাঠশালাগুলোতে বয়স্কদের শিক্ষাদান শুরু হলো। সে জানতো,বেশির ভাগ সংসার যৌনতা বিষয়ে অজ্ঞতার জন্য ভেঙ্গে যায়। ধর্ষণের মতো অপরাধ বেড়ে যায় সমাজে।আর এদিকে রাজা ও রতি প্রণয় আবেশে দিন কাটায়। রতির পরামর্শে রাজার কোনো অসুবিধা নেই। কোনো অভিযোগ নেই। রতির লেখা কামশাস্ত্রের পুঁথি দেশে বিদেশে সুনাম অর্জন করলো। পুঁথি উৎসর্গ করা হলো অমিয়ভূষণের নামে। রাজার সঙ্গে পরামর্শ করেই রতি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলো। কোনোক্রমে একটি পুঁথি অমিয়ভূষণের কাছে যায়। সে আবার স্মরণ করে রতির ভালোবাসা। সে বলে,ভালোবাসা শুধু গড়তে জানে। ধ্বংস তার অভিধানে নেই।অমিয়ভূষণ বুঝলো,রতির ভালোবাসার উপযুক্ত সে নয়। রাজাই তার উপযুক্ত প্রেমিক।

রাজার কাছে থাকতো তার বড় মেয়ে সোনা। সে অমিয়ভূষণের সঙ্গ পেয়েছিলো। তার জানা জ্ঞান কাজে লাগিয়ে দুই দেহরক্ষিকে কামশাস্ত্রে পারদর্শী করেছিলো। তারা এখন অভিজ্ঞ পুরুষ। সোনা তাদের বলে,নারীদেহ হলো বাঁশীর মতো। পারদর্শীর হাতে বেজে ওঠে সুর। আর আনাড়ি থুতু দিয়ে ভরিয়ে ফেলে বাঁশীর মুখ। পরে ভেঙ্গে ফেলে দেয় জলে। বাঁশী কোনোদিন সুরে বাজে না আনাড়ির হাতে।সোনা বিবাহ পদ্ধতি স্বীকার করে নি। শরীরের শিল্প না জানলে বিয়ে সার্থক হয় না। অশান্তি, জীবনহানির মাধ্যমে তার পরিসমাপ্তি ঘটে। অতএব শরীরকে জানতে হবে,বুঝতে হবে এটাই তার মতামত। সোনা অমিয়র সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য পাগলি হলো। অমিয় সোনাকে পেয়ে খুশি। কিন্তু গুপ্তচর ধরে ফেলে সোনা আর অমিয়কে। রাজার আদেশে অমিয়র লিঙ্গচ্ছেদ করা হয়। তার লিঙ্গ ছিলো ঘোড়ার লিঙ্গের মত বড়। তারপর অমিয়কে কবর দেওয়া হয় না পুড়িয়ে। মরার আগে সে অভিশাপ দিয়েছিল, রাজা নিহত হবে এক মাসের মধ্যে। তার অভিশাপ সত্যি হয়েছিলো।

প্রবীর বলল,আর এক কাপ চা খাব না আমরা, আমরা চা খাব না….। চায়ের আড্ডায় না গেলে জীবন চেনা যায় না।চায়ের দোকান একটা আস্ত দেশের সংস্কৃতি।খিস্তি খেউড় থেকে কবিতা,গল্প আর মানুষচেনার কথা চলে, চা পান করতে করতে…।

inbound4190519342914136108.jpg

Sudip Ghoshal

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *