Skip to content

মুখ ও মুখোশ

মুখোশ কৃত্রিম মুখ, কৃত্রিম মুখাবরণ। ছদ্মবেশ সাজতে মুখোশ। অন্য অর্থে কপট ভাব। এখানে আমাদের আলোচ্য বিষয় মুখাবরণ।
অদৃশ্য ও কল্পিত বিষয়কে মুখোশের প্রকাশ করা হয় যা মঙ্গল ও অমঙ্গল বাচক ঐন্দ্রিজালিকতা সৃষ্টির জন্য। মুখোশ শিল্পকে সাতটি সাতটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। পৌরাণিক মুখোশ, লোকায়ত মুখোশ, গ্রামীন মুখোশ, প্রাণী মুখোশ, সামাজিক মুখোশ, মিশ্র মুখোশ ও অনান্য মুখোশ।
লোকজ আচার অনুষ্ঠানে লোকনৃত্য মুখোশের ব্যবহারের মূলে রয়েছে আবহমান গ্রাম বাংলার নর – নারীর নানা অভিব্যক্তি যেমন বীরত্ব ব্যঞ্জক, কামভাব, সমমোহন ভাবের প্রকাশ, এছাড়া নানা কুপ্রভাব দূরীকরণে, লোকসমাজের যুগ যুগান্তরের সংস্কার ও বিশ্বাস অনুযায়ী আচার অনুষ্ঠানে বিভিন্ন লোকজ নৃত্য ছাড়াও বিভিন্ন উদ্দেশ্যে মুখোশ চিত্র তৈরি হয়েছে। মুখোশ সামাজিক বা ধর্মীয় ঐতিহ্যগত মূল্যবোধ ও শক্তি সাধনার স্বরূপের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। তাছাড়া লৌকিক ও পৌরাণিক গল্প গুলো হাসি, তামাশা, বিদ্রুপ ভয় ভীতির জন্যও মুখোশ মুখে লাগিয়ে
। নৃত্য ও অঙ্গভঙ্গির সাহায্যে ফুটিয়ে তোলা হয় নানা আচার অনুষ্ঠান।

বললে অতুক্তি হয় না মুখোশ হল এমন একটা বস্তু যা সাধারণত মুখের ওপর পরা হয়। সুরক্ষা, ছদ্মবেশ, কেবল বিনোদনের জন্য এটা পরা হয়।

কোভিড ১৯ মহামারী ছোট বড় সকলকে চেনাল মুখোশ কি ও কেন মুখোশ পরব। কোভিড ১৯ থেকে বাঁচার লড়াই এ মুখোশ ছিল একটা অস্ত্র।
অবশ্যই এই মুখোশ সারজিক্যাল মুখোশ। নাকে ধুলো ময়লা ঢাকতে আমাদের নিয়ত মুখোশ পরেলে ভালো।

মানুষের সামাজিক, শিল্প – সংস্কৃতিতেও মুখোশ ব্যবহারের ইতিহাস কয়েক শতক জুড়ে আছে।যার ইংরেজি নাম মাস্ক বাংলায় মুখোশ। এমনকি কৃষি জীবনের সাথে জড়িয়ে ” কাকতাড়ুয়া ” রূপী মুখোশ। কাক তাড়ুয়ারা মুখোশের আড়ালে থেকেই আমাদের মূল্যবান ফসল রক্ষা করে আসছে যুগ যুগ ধরে।
মুখোশ যখন চিত্র বাংলার লোক ও কারু শিল্পের অনবদ্য শৈল্পীক ছোঁয়ার সহাবস্থান ।
নৃত্যে অভিনয়ে মুখোশের আড়ালে থেকেই কলা প্রদর্শন এক অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে যেমন ছৌ শিল্পী ও শিল্প।
মুখোশ মানুষের একটা জীবনধারনের উপায় হয়েছে। পুরুলিয়ার মুখোশ গ্রাম চড়িদা তার নাম।
ছোট বড় সকলকেই মুখোশ শিল্প কে কতকাল
আঁকড়ে ধরে জীবন ধারনের রসদ খুঁজে নিয়েছে।
যেকোন পর্যটন মেলা বা কেন্দ্র গুলোতে মুখোশ বিক্রি হচ্ছে। সেই মুখোশ দিয়ে মানুষদের ঘর সাজানোর কাজে আনন্দ পাচ্ছে।
মুখোশ শিল্পের কাজগুলো কতগুলো পর্যায়ে করা হয়। তারা একাধারে মৃৎশিল্পী ও চিত্র শিল্পী।
মুখোশ তৈরিতে লাল, নীল, হলুদ, কাল রঙ যেমন প্রধান। তেমনি কাগজ, পুঁতি, তার, মালা, জরি আরো কত কি লাগে।
আর এই মুখোশ গুলো তৈরি করা হয় গ্রাম বাংলার পৌরাণিক দেব – দেবীর মুখাকৃতি বন জঙ্গলের বন্য পশুর মুখের নকল করে।

ছবি – মৌসুমি দেব নাথ ও গোগল
তথ্য সূত্র – রাজীব দত্ত

বিকাশ চন্দ্র মণ্ডল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *